হাথরাসের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামলো মহিলা তৃণমূল কংগ্ৰেস

4th October 2020 8:40 am বর্ধমান
হাথরাসের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামলো মহিলা তৃণমূল কংগ্ৰেস


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( জামালপুর ) :  কোন মহিলার হাতে থাকা ব্যানারে যোগীর ছবির নিচে লেখা রয়েছে গণতন্ত্রের ধর্ষক ।  আবার অন্য মহিলাদের হাতে থাকা ব্যানারের  কোনটিতে মোদিজীকে গণতন্ত্রের ধর্ষক  ও 
যোগীকে ‘রেপিস্ট ডন ’ বলে আক্ষা দেওয়া হয়েছে । উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার এই ভাবেই যোগী আদিত্যনাথ ও  নেরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা । দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এদিন পূর্ব বর্ধমানের  জামালপুর বাসস্ট্যান্ডে  প্রতিবাদ সভার আয়োজন করছিলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা ।এমনই সব ব্যানার হাতে নিয়ে সেই প্রতিবাদ সভায় দলের কয়েক শো মহিলা অংশ নেন ।সভা শেষে তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে হাথরসের তরুণীকে গণধর্ষণ কাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবি তোলেন । মহিলাদের এমন প্রতিবাদ রাজনৈতিক মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে । গণধর্ষন ও ধর্ষণকারীদের নির্যাতনে সম্প্রতি  উত্তরপ্রদেশের হাথরসে এক তরুণীর মৃত্যু হয় ।  সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে । ঘটনা  ধামাচাপা দিতে  যোগী সরকারের পুলিশ ও প্রশাসন নির্যাতিতার পরিবার , সংবাদ মাধ্যম ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সংসদের উপর যেভাবে দমন পিড়ন চালিয়েছে তার নিন্দা  সরব হয়েছে গোটা দেশ। প্রতিবাদে  সামিল হয়েছে বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দল গুলি। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীও এদিন কলকাতার রাজপথে নেমে প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান ।  পরে তিনি প্রতিবাদ সভাও করেন ।নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এদিন জামালপুরের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে জামালপুর বাসস্ট্যান্ডে । সেই সভায় জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান , ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি ভূতনাথ মালিক  উপস্থিত থাকেন । প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া  তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী শিপ্রা ওঝা ,মিনু ঘোষ , মাবিয়া বেগম  প্রমুখরা বলেন ,বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ চলছে । উত্তরপ্রদেশে মহিলারা সুরক্ষিত  নন । নির্ভয়া কাণ্ডের থেকেও ঘৃণ্যা 
গণধর্ষন কাণ্ড ঘটেছে হাথরসে । মৃত্যুর পরেও নির্যাতিতাকে রেহাই দেয়নি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ 
ও প্রশাসন । মৃতার পরিবারকে পুলিশ বন্দি করে রেখে তার দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ।  গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেবার জন্য  যোগী সরকার নির্যাতিতার পরিবার ও সাংবাদ মাধ্যমের উপরেও  রাষ্ট্রিয় সন্ত্রাস চালাতে কশুর করেনি। তৃণমূলের সাংসদ প্রতিনিধীদেরকেও নির্যাতিতার বড়িতে যেতে দেওয়া হয়নি । উত্তরপ্রদেশ পুলিশ বলপ্রয়োগ করে তৃণমূলের সাংসদদের হাথরস ছাড়তে বাধ্যকরে ।এই সমস্ত অগনতান্ত্রিক ও ঘৃন্য ঘটনার প্রতিবাদে গোটা দেশের পাশাপাশি তাঁরা জামালপুরের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরাও প্রতিবাদে স্বোচ্চার হয়েছেন । অপর তৃণমূল নেত্রী পূর্ণিমা  মালিক বলেন , উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন যে ভাবে গণধর্ষণ কাণ্ড ধামাচাপা দেবার কৌশল নেয় তার জন্যই তাঁরা বলতে বাধ্য হয়েছেন যোগী  আদিত্যনাথই হলেই ‘রেপিস্টদের ডন ’। পাশাপাশি গনতন্তের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যমকে গণধর্ষনের খবর সংগ্রহে যে ভাবে বাধা দেওয়া  হল তার জন্যই তাঁরা নরেদ্র মোদি ও যোগী আদিত্যানাথকে  গণতন্ত্রের ধর্ষক হিসাবে চিহ্নিত করেছেন । পূর্ণিমা মালিক আরও বলেন ,মহালয়ার পর এখন দেবীপক্ষ চলছে ।আর কয়েকদিন পরে মহিষাসুর বধ হবে । বাংলার নারীরা  এখন  মনে করছেন বিজেপির যোগী আদিত্যনাথই বর্তমান ভারতে সেই মহিষাসুর । আগামী বিধানসভা ভোটে বাংলার মহিলারা এই মহিষাসুর ও তার দলকে যোগ্য জবাব দেবে । 


 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।